২৮ মার্চ ২০২৪ বৃহস্পতিবার, ১০:০৬ এএম
স্পোর্টস ডেস্ক
শেয়ার বিজনেস24.কম
রানবন্যার ম্যাচে ইতিহাস গড়ল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় রানের কীর্তি গড়েছে দলটি। পৌনে তিনশ রানের বিশাল লক্ষ্য দিল তারা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সও লড়াই করল বেশ। আর তাতেই রেকর্ড বইয়ের অনেক পাতা ওলটপালট হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রানউৎসবের ম্যাচটিতে হায়দরাবাদ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
বুধবার হায়দরাবাদ ঘরের মাঠ রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ৩১ রানে জিতেছে। প্যাট কামিন্সদের ২৭৭ রানের পুঁজি তাড়া করতে মুম্বাই ২৪৬ রানে থামে। এর আগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অধীনে ছিল আইপিএলে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ডটি ছিল। ২০১৩ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ২৬৩ রানকরেছিল দলটি। এক দশক পর সেই রেকর্ড ভেঙে দিল হায়দরাবাদ।
এরপর মুম্বাইয়ের ব্যাটারদের তাণ্ডবে একটা সময় মনে হচ্ছিল এই রানতাড়া করাও সম্ভব। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পেরে ওঠেনি তারা। তবে তাদেরও দুইশ ছাড়ানো রানের সৌজন্যে ক্রিকেট বিশ্ব দেখল স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের বিশ্বরেকর্ড। ম্যাচটিতে মোট রানহয়েছে ৫২৩। আইপিএল তো বটেই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এত রানহয়নি আগে কখনো। আগের রেকর্ড ছিল ৫১৭ রানের। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে হয়েছিল এই রান।
এদিকে আইপিএল ইতিহাসে এই প্রথম এক ম্যাচে হলো পাঁচশ রান। এর আগে ২০১০ সালে রাজস্থান রয়্যালস ও চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচে হয়েছিল ৪৬৯ রান।
এদিন ছক্কার বৃষ্টি ঝরানহায়দরাবাদ ও মুম্বাইয়ের ব্যাটাররা। হায়দরাবাদের ইনিংসে ছক্কা হয়েছে ১৮টি, মুম্বাই মেরেছে ২০টি। ম্যাচে মোট ছক্কা হয়েছে ৩৮টি। এটাও বিশ্ব রেকর্ড। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কার আগের রেকর্ডটি হয়েছিল আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে। ২০১৮ সালে বালখ লেজেন্ডস ও কাবুল জাওয়ানানের ম্যাচে হয়েছিল ৩৭টি ছক্কা। আইপিএলে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ৩৩ ছক্কা হয় তিনটি লড়াইয়ে।
হায়দরাবাদ-মুম্বাইয়ের ম্যাচটি আইপিএলে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারির রেকর্ডও স্পর্শ করেছে। এই লড়াইয়ে মোট বাউন্ডারি হয়েছে ৬৯টি। ২০১০ সালে চেন্নাই ও রাজস্থানের ম্যাচটিতেও হয়েছিল সমান সংখ্যক বাউন্ডারি। চার-ছক্কা থেকে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রানহয়েছে এই ম্যাচে, ৩৫২ রান। আগের রেকর্ডটি ছিল ৩৩৬ রানের, যা হয়েছিল চেন্নাই ও রাজস্থানের ২০১০ সালের ওই ম্যাচে।
টস জিতে রেকর্ডমালার ম্যাচটিতে ব্যাটিংয়ে নামা হায়দরাবাদকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ট্রাভিস হেড। ২০১৭ সালের পর প্রথমবার আইপিএলে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ৩ ছক্কা ও ৯ চারে ২৪ বলে করেন ৬২ রান। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৮১ রানতোলে হায়দরাবাদ।
অভিশেক শার্মা পরে তাণ্ডব চালিয়ে খেলেন ৭ ছক্কা ও ৩ চারে ২৩ বলে ৬৩ রানের খুনে ইনিংস। শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে হাইনরিখ ক্লসেন করেন ৮০ রান। তার ৩৪ বলের বিধ্বংসী ইনিংস সাজানো ৭ ছক্কা ও চারটি চারে। দলকে রেকর্ডের চূড়ায় তোলার পথে এইডেন মারক্রাম ২৮ বলে করেন ৪২ রান।
মুম্বাইয়ের রানতাড়ায় শুরুটাও ছিল আশা জাগানিয়া। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে ভাঙে তাদের উদ্বোধনী জুটি, ততক্ষণে দলের খাতায় রান৫৬। ৪ ছক্কা ও ২ চারে ১৩ বলে ৩৪ রানকরে আগে বিদায় নেন ইশান কিষান। পরের ওভারে ঝড়ের আভাস দেওয়া রোহিত শার্মাও (১২ বলে ২৬) ফেরেন।
মুম্বাইকে লড়াইয়ে রাখেন তিলাক ভার্মা। ৬টি ছক্কা ও ২ চারে ৩৪ বলে ৬৪ রানকরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দুটি করে ছক্কা-চারে ১৪ বলে ৩০ রানআসে নামান ধিরের ব্যাট থেকে। পাওয়ার প্লেতে ৭৬ রানকরা মুম্বাইয়ের ১০ ওভার শেষে রানছিল ১৪১। তিলাকের বিদায়ের পর হার্দিক পান্ডিয়া পারেননি রানের চাকা সচল রাখতে। ২০ বলে ২৪ রানকরেন মুম্বাইয়ের অধিনায়ক।
টিম ডেভিডের ২২ বলে ৪৪ রানও `ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার` হিসেবে নামা রোমারিও শেফার্ডের ৬ বলে ১৫ রানে কেবল মুম্বাইয়ের হারের ব্যবধানই কমে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।